উপন্যাস পার্ট

রন দ্য ড্রাগন হোল্ডার – ১

সূচীপত্র || রন দ্য ড্রাগন হোল্ডার – ২

ড্রাগন দ্বীপ, ১৭৬০

নীল, সেনাবাহিনীকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দাও এবং দ্বীপের তীরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের সাথে যাও। আমরা এখন আর এই যুদ্ধে জিততে পারব না। ড্রাগন হোল্ডার এখানে আসার সাথে সাথে কাউকে ছাড়বে না। বেশিক্ষন এদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। মার্টিন তার কমান্ডারকে বলে ড্রাগন দ্বীপের বালুকাময় যুদ্ধক্ষেত্রে সাপের মতো হামাগুড়ি দিয়ে তার ৬ ফুট লম্বা তলোয়ারটি একটি কেন্দ্রে ঠেলে দিয়েছেন। ড্রাগনের কেন্দ্রস্থলে।

এই সময় ড্রাগন দ্বীপে সম্রাট মার্টিন এবং ড্রাগনদের মধ্যে প্রচন্ড যুদ্ধ চলছিল, যেখানে মার্টিনের মানব বাহিনী একদিকে ছিল এবং অন্যদিকে, আকাশে বসে একটি বিশাল ড্রাগন। ড্রাগনের নেতৃত্বে অগণিত বাহিনী। কালো ছায়ার ড্রাগনগুলি যোগদানের সাথে সাথে মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে যুদ্ধটি শেষ হয়ে যায় এবং সমুদ্র শাসনকারী সম্রাট মার্টিনের বিশাল সেনাবাহিনীর মধ্যে এখন সেই যুদ্ধক্ষেত্রে কেবল একটি ইউনিট জীবিত ছিল এবং একটি সৈন্যদল সমুদ্রের তীরে জাহাজে বসে সম্রাট আমলের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজে নিয়োজিত ছিল।

আমি কি করব, সম্রাট, এখান থেকে বেঁচে গিয়ে? আমি একজন সাধারণ সৈনিক। আপনি আমার মতো অসংখ্য সৈন্য খুঁজে পাবেন সুলতানিদের রক্ষা করার জন্য। আপনি যান। মাটিতে একটি ড্রাগনকে দ্রুতগতিতে ওর দিকে হামাগুড়ি দিতে দেখে নীল এক হাতে তলোয়ার নিয়ে সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং ওটার মাথায় পা রেখে তলোয়ার দিয়ে ওটার ঘাড় সরাসরি শরীর থেকে আলাদা করে দিল। সেই অজগরের সারা শরীরে আগুন জ্বলতে লাগলো।

সেই ড্রাগন হয়ত বুঝতে পেরেছিল যে নীল তার ঘাড় কাটতে চলেছে, তাই সে তার মুখ দিয়ে আগুন নিক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তার শরীরে যে আগুন তৈরি হয়েছিল তা সেই ড্রাগনের শরীর থেকে বেরিয়ে আসার আগেই নীল তার ঘাড় কেটে ফেলে যার কারণে তার শরীর তার সৃষ্ট আগুনে জ্বলতে থাকে।

সম্রাট মার্টিনের সেনাবাহিনী তখনও সাপের আকৃতির ড্রাগনদের সাথে যুদ্ধ করছিল, কিন্তু যখন বাতাসে উড়তে থাকা এবং ডানাবিহীন অনেক জাহাজের আকারের বিশালাকার ড্রাগনরা যুদ্ধক্ষেত্রে কম্পিত হয়ে আসে, তখন সেই গুলো সম্রাট মার্টিনের সেনাবাহিনীকে পিঁপড়ার মতো পিষে ফেলে। যে ড্রাগনরা গতকাল পর্যন্ত এখানে রক্ষক ছিল, তারাই আজ ভক্ষক হয়ে উঠেছে। সে মধ্যরাতে সম্রাট মার্টিনের বিশাল বাহিনীকে হত্যা করে এবং সম্রাট মার্টিন তার বন্ধু নীলের সাথে নিজের এবং তাদের জন্য যুদ্ধ করছিল। প্রতিরক্ষা লাইনের শেষ অংশে তার সালতানাতের লোকেরা। যে সৈন্যদলের কমান্ডার ছিল নীল।

আক্রমণের জন্য প্রস্তুত।. তার বাম হাতে শক্তভাবে মাটিতে পড়ে থাকা ঢালটি শক্ত করে নীল আকাশে দৈত্যদের উড়তে দেখে চিৎকার করে, এবং তার সৈন্যরাও একই কাজ করে। উৎসাহের সাথে সাড়া দিয়ে নীল মুখ ফিরিয়ে নিল মার্টিনের কাছে।

এটাই আমাদের শেষ প্রতিরক্ষামূলক ঢাল, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি যত সংখ্যক লোককে পারেন সেই নতুন পৃথিবীতে নিয়ে যান।

তুমি আমার সাথে আসো নীল। তুমি এটাকে আমার অনুরোধ বা আদেশ হিসেবে গ্রহণ কর। আমরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছু হটার পরও তাদের সাথে দেখা করতে পারি।

যে সম্রাট তার সালতানাতের জনগণকে রক্ষা করতে পারে না সে সম্রাট বলার যোগ্য নয়। আর সম্রাটের এত মোহ কেন। এই মুগ্ধতার কারণে সৃষ্ট ছলনা কি তোমার চোখ থেকে এই মোহের আবরণ সরাতে পারেনি..? .???

নীল, আমার ড্রাগন আসবে না। সে ড্রাগন হোল্ডারের হাতে মরেছে, গতবারের মতো এবার অলৌকিক কিছুর আশা নেই.. তুমি হেরে যাবে।

আমাদের মতো সৈনিকদের পরাজয় ও জয়ের ঊর্ধ্বে চিন্তা করে যুদ্ধ করতে হয়, সম্রাট। জয় হোক বা হারুক, বাঁচুক বা মরুক।এটাই আমাকে ছোটবেলা থেকে শেখানো হয়েছে এবং এখন যদি পিছিয়ে যাই তাহলে আমার কোন অস্তিত্ব থাকবে না.. বহির্বিশ্বের ছলনা, বিশ্বাসঘাতকতার সাথে আমার কি সম্পর্ক, সম্রাট? আমি একজন সাধারণ সৈনিক, যে যখন থেকে চেতনা পেয়েছি, হাতে একটি তলোয়ার পেয়েছি.. যুদ্ধ – রক্ত দিয়ে সেচতে শেখানো হয়েছে, সামনের প্রতিপক্ষের রক্তই হোক আর আমারই হোক। পিছিয়ে গেলেই ঝাপসা হয়ে যাবে। আপনি যান, আপনি সম্রাট।

আমি তোমার ছেলেকে কি বলব। যখন তার চোখ তোমাকে আমার পাশে খুঁজে বেড়াবে। মার্টিন তার ভারী ৬ ফুট লম্বা তলোয়ারটি নীলের দিকে নির্দেশ করে বললো।

তাকে বলবেন আমার মৃত্যুকে সম্মান করতে। বিদায়। সম্রাট।

নীলের পীড়াপীড়ির কারণে, মার্টিনকে মাথা নত করতে হয়েছিল এবং সেখান থেকে একটি ঘোড়ায় চড়ে সেই জায়গার উদ্দেশ্যে রওনা হয় যেখানে সালতানাতের লোকেরা এখনও আটকা পড়ে আছে, যেখান থেকে লোকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং দ্বীপের তীরে মৃত জাদুর জাহাজগুলি।

আধ্যাত্মিক জাহাজ ভর্তি করা হচ্ছে। যাইহোক, মার্টিন তার জাদুর তলোয়ারটি যেটি ড্রাগনের প্রচণ্ড আগুনেও গলেনি, নীলকে দিয়েছিল। কিন্তু সে তলোয়ারটি তুলে বাতাসে দোলাতেও পারেনি।

ঘোড়ায় চড়ে দ্রুত পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে মার্টিন পিছন ফিরল… সে তার সৈন্যদের আগুনে পুড়ছে বলে চিৎকার শুনতে পেল… নীলের এক হাত কেটে ফেলা হয়েছে এবং তারপর মানুষের মতো সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং দুই পায়ে হাঁটছে।ড্রাগন .. যার শরীর ছিল অর্ধেক মানুষ এবং অর্ধেক ড্রাগন ।.. নীল ব্যথায় গর্জন করে, এক হাতে তলোয়ার চালিয়েছিল যদিও এক হাত আগুনে কাটা পরেছে।

 

বর্তমান সময়, আটলান্টিক মহাসাগর

সমুদ্রের মাঝে একের পর এক বড় বড় ডেউ কেটে চলতে থাকা এক বিশাল জাহাজ আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম দিকে যাচ্ছে। জাহাজের এক কোনে দাড়ানো ওই জাহাজের এক লোক খালি চোখে দুরে দেখার চেস্টা করছে। সামনে ভয়ঙ্কর তুফান দেখে ভয় পেয়ে গেল।

ক্যাপ্টেন, মনে হয় আমরা ডেভিল ট্র্যাঙ্গেলের কাছে পৌছে গেছি। বলে কিছুক্ষন ওখানে দাড়িয়ে থেকে কোন উত্তর না পেয়ে আবার জোড়ে জোড়ে বলল। কোন উত্তর নেই।

এটা কেমন লুইচ্চা ক্যাপ্টেন আমাদের, যখনই দেখো জাহাজে মজুদ করা মেয়েদের নিয়ে মোজ মাস্তিতে ব্যস্ত থাকে। আর আমাকে এখানে খাড়া করে পাহাড়া দেওয়ায়। শালা লুইচ্চা।

কি হইছে? এমন গলা ফাটায়া চিল্লাচ্ছিস কেন।

সামনে থেকে এক লম্বা আর মজবুত শরিরের লোক জামা ঠিক করতে করতে আসতে আসতে বলল।

ক্যাপ্টেন আদিত্য, আমরা মনে হয় শয়তান ট্র্যাঙ্গেলের কাছে পৌছে গেছি।

পৌছে গেছি, এত তাড়াতাড়ি? সামনে থেকে সর।

ক্যাপ্টেন আদিত্য শার্টের পকেট থেকে ম্যাপ বেড় করে সামনে ফেলে বিশাল সমুদ্রের দিকে দেখতে লাগল।

এই ম্যাপও তো ছিড়ে গেছে, সত্যিকারের পরিস্থিতি তো বুঝতে পারছিনা।

এখন কি করবো ক্যাপ্টেন । বলেন তো জাহাজকে থামাতে বলি।

আরে জাহাজকে কেন থামাবি। তোর এই কুতকুতে চোখে দেখতে থাক, কোন বিপদ হলে আওয়াজ দিছ। আমি আসতাছি, কাজ বাকি রেখে আসছি।

আদিত্য সেখান থেকে জাহাজের ভিতরে এক রুমে চলে গেল। গেট খোলাই ছিল, গেটে এক ধাক্কা দিয়ে রুমে ডুকে পরল। সামনে বিছানায় এক উলঙ্গ মেয়ে নিজের দুই পা ফাক করে শুয়ে আছে, খোলা গুদ থেকে টপ টপ করে জল ঝড়ছে।

আমার ক্যাপ্টেন এসেছ, আসো, আর অপেক্ষা করতে পাড়ছিনা

শালি তোর ঝর্ণা বন্ধ কর, এই চাদরকি তোর বাপ এসে ধুবে?

আদিত্য নিজের একটা আঙ্গুল ওর গুদে ভচৎ করে ভরে দিল।

আআআআআহহহহহহ।., আস্তে ক্যাপ্টেন ব্যাথা লাগছে।

নে আগে ধন চুসে খাড়া কর, বেকুবটা ডেকে ধন বসায় দিছে।

বিছানায় শোয়া মেয়েটি খুশিতে আদিত্যর বাঁড়া নিজের হাতে পুরে যেই মুখে নিবে তখনই জাহাজ ভয়ানক ভাবে ধুলতে লাগল।

আবার কি হল, তুই এখানে পড়ে পড়ে নিজের জল খসাতে থাক, আমি দেখে আাসি কি হল।

জাহাজের বাহিরে দাড়ানো সেই লোক এখনও সামনে দেখছে।

আবার কি হল রে?

ক্যাপ্টেন, মনে হয় তুফান আসতাছে।

তুফান! মনে হয় সমুদ্রের বাঁড়ায় খুজলি হইছে। আরে এটা কি?

কোথায় ক্যাপ্টেন?

সামনে দেখ। আকাশে এত বড় পাখি কবে থেকে ঘুরা শুরু করছে?

পুরো জাহাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত, সমুদ্রের ভয়ঙ্কর ঢেউ লাগাতার জাহাজে এসে বাড়ি মারছে, জাহাজের ঝাকি আর দোলনে জাহাজের সকলে বের হওয়ার জন্য এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে লাগল, কেউ কেউ অন্ধকারে সামনে দেখতে লাগল।

আদিত্য-আরে কেউ কি বলবে আকাশে এটা কি উড়ছে?

ক্যাপ্টেন, সরে আসেন।. জাহাজে কাজ করা লোকটা আদিত্যকে পিছনের দিকে টেনে ধরল। এর পর জাহাজের আর এক লোক ওর পিছন থেকে বলল।

ক্যাপ্টেন এটাতো ড্রাগন

আচ্ছা তবে এটাই তাহলে ড্রাগন, এই জন্যই ওর পাছা থেকে আগুন বের হচ্ছে। বন্দুক বের কর, মার বেটারে, আজ রাতের খাবারের বন্ধবস্ত হয়ে গেল।

সবাই চুপচাপ দাড়িয়ে দাড়িয়ে অবাক হয়ে দুইজনকে দেখতে লাগল।

আদিত্য -আরে, এটাকে খাবি না নাকি? যাও মার এই ড্রাগনকে।

সবাই তখন জাহাজ থেকে যার যার বন্দুক বের করে সামনে ভয়ঙ্কর অন্ধকারেই গুলি চালাতে লাগল। সমুদ্রের ভিতর থেকে তখন এক তেজ আওয়াজ পুরো জাহাজকে গ্রাস করে ফেলল। সেই বিকট আওয়াজে সকলে যার যার বন্দুক ফেলে কান চেপে দড়ল।

আদিত্য-আরে সমুদ্রের মধ্যে আবার কোন বেসুরা চিল্লাইতাছে,

ক্যাপ্টেন, সামনে দেখ,

সামনে সমুদ্রের জল অনেক উপরে উঠে গেছে, আবার সেই বিকট আওয়াজ শোনা গেল এবং সাথে সাথে সমুদ্রের জল জাহাজের উপর আসড়ে পরে পুরো জাহাজকে সমুদ্রের ভিতর নিয়ে নিল।

 

কলকাতা, ভারত

কলকাতার বিখ্যাত হোটেল শুমার ওবেরয় গ্র্যান্ডের সামনে একের পর এক দামী দামী গাড়ির লাইন লেগে গেছে। কারণ ওবেরয় গ্র্যান্ডে হতে যাওয়া এপেক্স প্রিডেটোর নামের এক জাহাজ বানানো কোম্পানীর আপদকালিন একটি জরুরী মিটিং আছে যেখানে শহরের সব ধনীরা উপস্থিত হয়েছে।

সবাই চলে এসেছে? মিটিং রুমে বসা এক ২৮ বছরের নব্য যুবতী সি.ই.ও নিজের সিট থেকে উঠে বলল। কিছু লোক সেই মেয়েটিকে মাথা ঝাকিয়ে হ্যা উত্তর দিল। আর কিছু লোক যারা ওর সি.ই.ও হওয়াতে নারাজ তারা চুপ করে থাকে। মেয়েটি তার পিতার কোম্পানীর ডিরেক্টরদের মনোভাবে বুঝতে পারে যে আজকের মিটিং সহজ হবে না।

ওর সামনে লাগানো স্ক্রীনের দিকে ইশাড়া করে যেখানে কলকাতা পোর্টে দাড়ানো এক বিশাল জাহাজের ছবি ছিল। যার ডেকের উপর ক্যাপ্টেন আদিত্য দাড়িয়ে আছে।

আমাদের জাহাজ যেটা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, ডেভিল ট্রায়াঙ্গল ও যাকে বলে, সেটা এক্সপ্লোরেশনের জন্য গিয়েছে। কিন্তু লাস্ট ২ দিন ধরে ওই জাহাজের সাথে আমাদের সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

মিস রিয়া। ডিরেক্টরদের চেয়ারে বসা সবাই এটা শুনতেই সিধা হয়ে বসে নিজেদের মধ্যে খুশর ফুশর করতে থাকে। রিয়ার ওই এক কথায় সবাই এমন ঝাটকা খেয়েছে যে তাদের মুখ থেকে একটা শব্দও বের হচ্ছিল না। কারন এটা দ্বিতীয়বার যে রিয়া এপেক্স প্রিডেটোর কোম্পানীর জাহাজ ওই ডেভিল ট্রায়াঙ্গল এক্সপ্লোরেশনে পাঠিয়েছিল। কিছু লোক তো এই সফরের প্রথম থেকেই রিয়ার বিপক্ষে ছিল আর যারা ছিল না তারা এই খবরের পর হয়ে যাবে যাচ্ছে যা এখন রিয়া বলতে যাচ্ছে।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর। ওই জাহাজের খোজে আমাদের সকল প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ামির লোকাল অথোরিটি কয়েক ঘন্টা আগে কিছু ছবি রিলিজ করেছে। রিয়া স্লাইড চ্যান্জ করে আর স্লাইডে বিশাল সমুদ্রে জাহাজের কিছু মালাবি টায়ারের ছবি। যা একটাতে এপেক্স প্রিডেটর লেখা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

ক্যাপ্টেন আদিত্য আর জাহাজের সবার ফিরে আসার সম্ভাবনা ক্ষীন। এজন্য ওই সবাইকে মৃত হিসেবে ধরে নেওয়া আমার মতে কোন অত্তোক্তি হবে না। আমি আমার এই অসফল প্রজেক্টের জন্য সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি আর সামনে কি করা উচিৎ তাতে আপনাদের সবার রায় চাচ্ছি। কিন্তু শেষ দুই ব্যর্থতা থেকে আমি এটা নিশ্চয় শিখেছি যে এরপর আমাকে কি করতে হবে। এটা বলে ও যেয়ে নিজের সিটে বসে চুলে আঙ্গুল চালাতে থাকে। তখন এক আধা বয়সি লোক সবার মাঝ থেকে উঠে আর নিজের চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,

মিস রিয়া।. এখন আর আমরা কি বলব। এই প্রজেক্ট আপনার ইচ্ছা ছিল আমাদের না। আপনি এই ডেভিলস ট্রায়াঙ্গেলের পিছনে দৌড়োচ্ছেন। আমরা সবাই বলেছিলামও যে এটা অসম্ভব। কিন্তু আপনি আমাদের কথা শুনেন নি। সমুদ্র অনেক বিশাল, এটা আমাদের চিন্তা আর লালসা দিয়ে বুঝা যাবে না। এখন আমাদের রায় দেয়াতে কি হবে আর না দেয়াতে কি হবে। একটু থেমে সব ডিরেক্টরে দিকে একবার তাকিয় আবার বলে, আমি মিস রিয়াকে। সিইও পদ থেকে অপসারণের প্রস্তাব করছি। যা দুইদিন পর হতে যাওয়া আমাদের বার্ষিক সভায় আমাদের ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

একথা বলার পর লোকটি বসল এবং বসার সাথে সাথে সমবয়সী আরেকজন উঠে দাঁড়ালো।

আপনার কি একটুও ধারনা আছে রিয়া জি।যে এই খবর বাহিরে পৌছালে আমাদের কোম্পানির শেয়ারের কি অবস্থা হবে।?? আমরা আপনার বাবাকে অনেক শ্রদ্ধা করি, কিন্তু আমরা সবাই আপনার ক্রমাগত ব্যর্থ প্রকল্প এবং তার ব্যর্থতায় বিরক্ত। আপনার কোন ধারণা আছে যে আপনার অনুসন্ধানের ইচ্ছার কারণে দুটি জাহাজ ধ্বংস হয়ে গেছে।?? আমরা বিজ্ঞানী নই বা মানুষের উন্নতি আমাদের উপর নির্ভরশীল নয়। আপনার বাবা আর এই পৃথিবীতে নেই, কিন্তু তার নির্দেশে আমি বহু বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে যুক্ত। কিন্তু এখন আমরা মনে করি যে আমাদের অপচয় করা বন্ধ করা উচিত আর সমস্ত অবশিষ্ট অর্থ শিপিং ব্যবসাকে অগ্রসর করার জন্য রাখুন, আপনার অযৌক্তিক প্রকল্পগুলিতে নয়। এবং আমি মনে করি এখানে উপস্থিত কোম্পানির সকল বোর্ড সদস্যরা আমার মতামতের সাথে একমত হবেন। আর আরেকটি বিষয় রিয়া জি। পরবর্তী সভায়, আমি আপনাকে সিইও পদ থেকে অপসারণের জন্য ভোট দেব।

রিয়ার মুখ জ্বলে উঠে, সে রেগে গেল কিন্তু শান্ত থাকার চেষ্টা করে। সবাই রিয়া এবং তার প্রজেক্টকে অযথা এবং অপব্যয়কারী বলে আখ্যা দিচ্ছিল, কেউ কেউ রিয়াকে ফালতু বলেও আখ্যায়িত করেছে। রিয়া তার আসন থেকে উঠে দাঁড়ালো, মিটিংয়ে উপস্থিত সবাইকে দেখে বলে,

আপনারা সবাই বিশ্বাস রাখুন, পরের বার আমরা অবশ্যই সফল হব। আমি জানি এখন কি করতে হবে।

দুঃখিত মিস রিয়া, এখন আমরা আর আপনাকে সমর্থন করতে পারব না। এই বলে মিটিং থাকা সব বোর্ড মেম্বার উঠে এক-এক করে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। আর কিছুক্ষন পর সেখানে শুধু দুইজন থাকে। এক রিয়া আর দ্বিতীয় জন ওর সেক্রেটারি।।।

ম্যাম।. পানির গ্লাস টেবিলে রিয়ার দিকে দিতে দিতে ওর সেক্রেটরি বলে।

এর জবাবে রিয়া প্রথমে সেক্রেটারির দিকে রেগে তাকায় তারপর পানি ওয়ালা গ্লাস উঠিয়ে জোরে সামনের স্ক্রিনে ছুড়ে মারে আর রাগে নিজের চেয়ারে বসতে বসতে সেক্রেটরির দিকে তাকায়। এক মুহুর্তের জন্য সেক্রেটারি বিভ্রান্ত হয়ে গেল। জি ম্যাম। ও। সরি ম্যাম। মনে পড়তেই তাড়াতাড়ি নিজের পার্স থেকে সিগ্রেটের প্যাকেট থেকে এক সিগ্রেট বের করে রিয়াকে দেয় আর ল্যাইটার অন করে সিগ্রেট জালিয়ে দেয়।

তুমি জান না এই লোকেরা কত বড় ভুল করছে। এরা জানেই না ডেভিল ট্রায়াঙ্গেলে কত ধনসম্পদ সমুদ্রের মধ্যে ডুবে আছে। কিন্তু আমি হার মানব না। পরের মিটিংএর পাওয়ার আমার হাতে। আর আমার হাতেই থাকবে। আমি এইসব টাকলুসদের কোনো পরয়া করি না। কলকাতা বন্দর থেকেই যাব আর এইবার আমি নিজে যাব জাহাজের সাথে। এবার ক্যাপ্টেন এপেক্স প্রিডেটোরের হবে না।

কিন্তু ম্যাম, ক্যাপ্টেন আদিত্যর তো কোন খবর নেই, বিনা কাপ্টেনে আপনি।.?? আর কে আছে যে ডেভিল ট্রায়াঙ্গেলে যাওয়ার জন্য রাজি হবে। তাও এই ঘটনার পর?

ক্যাপ্টেন আদিত্যর সব জাড়িজুড়ি ফালতু প্রমানিত হয়েছে। অনেক বলত যে সমুদ্র ওর গোলাম, সমুদ্রের পানি পান করে করে সমুদ্র শুকিয়ে ফেলবে। ভালই হয়েছে যে কমিনা মরেছে। বেশি গর্ব করার ফল পেয়েছে।

কিন্তু ম্যাম। কে রাজি হবে যাওয়ার জন্য।??

এক মার্চেন্ট নেভির অফিসার আছে আমার পরিচিত। ওনার মেয়ের অ্যাড্রেনাল ক্যান্সার হয়েছে আর ওনার পয়সার খুব প্রয়োজন। আর যদি সে আমাদের সাথে আসে তো সাথে নিশ্চয়ই কিছু লোকও নিয়ে আসবে। বাকি  কলকাতার এলাকা থেকে নাবিক দের উঠাবো। দুই বেলা খাবার আর মদের জন্য তো এরা জাহান্নামে যাওয়ার জন্যও তৈরী হয়ে যাবে। আর ওকে খুজে বের কর.. কি যেন নাম ওর যার সম্পর্কে লোকজন কিছু বলছিল? যে নিজেকে সমুদ্রের শিকারি বলে বেড়ায়।

কার কথা বলছেন আপনি?

ওই যে পাগলটা.. রন। নাম ওর। ওর সম্পর্কে খোজ লাগাও। কোথায় সে এখন।

আচ্ছা ওইটা! ম্যাম আপনি ওই পাগলকে কেন ডাকছে? ও যেভাবে আমাকে দেখছিল আগেরবার।আমার একটুও ভাল লাগে নি।

তুমি তো জানো সে একবার আমার জীবন বাচিয়েছিল। যদিও সে কথা আলাদা আর আমি তাকে খুবই অপছন্দ করি। কিন্তু এই লোক অনেক কাজের।

ঠিক আছে। ম্যাম।

কাজে লেগে যাও তাহলে। আর যদি রন তোমার ইজ্জতও চায় দিয়ে দিও। দুই পা টেবিলের উপর রেখে রিয়া বলে আর টেবিলে রাখা নির্মল চক্রবর্তীর  মহান সমুদ্র সম্রাট মার্টিন বই পড়তে থাকে।

 

কলকাতার সমুদ্র এলাকার সাথে এক ছোট শরাব খানায় হট্টগোল চলছে।  এখানের অবস্থা দেখে সহজেই বোঝা যায় এখানে কি ধরনের লোক আসে। কেউ কারো সাথে মারামারি করছিল। কেউ মদের নেশায় নিজের বিরত্বের কিচ্ছা শুনাচ্ছে। কেউ নেশায় মাতাল হয়ে মাতলামি করছে। মাতাল হয়ে নিজের জামাকাপড় ছিড়ছে বা অন্যের। কেউ জোশে সবার সামনেই হাত মারছে। তবে সবাই কিছু না কিছু করছেই। কেউ বসে, কেউ দাড়িয়ে, কেউ শুয়ে।

এই সময় আজব ধরনের জামাকাপড় পরে নেশায় ঢুলতে ঢুলতে এক লোক ভিতরে আসে।

আবে ওই, না বলে ঢুকে যাচ্ছিস ভিতরে। চল এন্ট্রি কর। কাউন্টারের পাশে বসা লোক ওই লোককে আওয়াজ দেয়।

সস্তা মদ এখানেই তো পাওয়া যায় তাই না?

এন্ট্রি কর।

এন্ট্রি করা কি জরুরী? আসলে আমি অনেক ফেমাস আর যদি কেউ জেনে যায় আমি এই সব জায়গায় আসি তো।।..

ফেমাস আর তুই!! ল্যাওড়া। মজা করিস না। একে তো ফকিন্নির মত কম্বলের কাপড় পড়া আর কত বছর ধরে ধোসও নাই। আর তোর শরীর থেকে মরা পশুর মত দুর্গন্ধ আসছে। তোকে দেখলেই বুঝা যায় কয়েক মাস ধরে গোসলও করস নাই। আর তুই ফেমাস??

কয় মাস ধরে? আমি গোসল করি নাই ১ বছরের বেশি হয়ে গেছে। কম সময় বলে আমাকে বেইজ্জতি করিস না।

তুই আবল তাবল বলা বন্ধ কর আর এন্ট্রি কর। নাম কি?

কার, আমার?

নাহ তোর বাপের নাম বল।

ওইটা তো আমি জানি না।

তোর নাম বল। জানি না কেমন কেমন লোক চলে আসে এখানে।

আমার নাম, উমমমম। রঞ্জু – ওখাদাওয়ালা – নেভারত।

এইটা আবার কেমন নাম? অন্য নাম আছে?

অন্য নাম আছে। দ্য রন! মহান সমুদ্রের শিকারি

রন তো নিজের নাম বলে আগে বাড়ে। কিন্তু রন চলে যাওয়ার পর কাউন্টারের লোক নিজের পকেট থেকে এক কার্ড বের করে আর ওই কার্ডের নাম্বারে তুরন্ত কল করে।

হ্যালো ম্যাম।.. আমি ভোকুয়া বলছি। যাকে আপনি সকালে গর্তে থাকা ইন্দুর বলেছিলেন ।.মনে পড়েছে? ও এসেছে।।

।.কিছু করছে না বাস এক সস্তা মদের বোতল মুখে লাগিয়ে দাড়ায় আছে। আর ও একটু আগে এক বোতল একজনের মাথায় ভেঙ্গেছে। আপনি আসুন জলদি।.।

ওই কাউন্টারের লোকের কলের কিছু পর এক বড় আলিশান কার সেই শরাবখানার ঠিক বাহিরে আসে। কার থেকে রিয়া বের হয়ে সোজা শরাব খানার কাউন্টারের লোকের কাছে আসে। সাথে ওর সেক্রেটারিও।

কোথায় সে? রিয়া সোজা প্রশ্ন করে।

ওখানে ম্যাডাম। কিন্তু আমাকে কিছু। দানাপানির জন্য।. হে।হে।।.। পয়সার জন্য দাত বের করে ওই লোক বলে। রিয়া তার সেক্রেটারিকে আওয়াজ দেয়।

জী।জী। ম্যাম।

একে ওর মেহনতের মজুরী দিয়ে দেও। এটা বলে রিয়া নিজের চেহারার অর্ধেক রুমাল দিয়ে ঢেকে সেই মাতালদের মাঝে টেবিলে বসে থাকা রনের কাছে চলে যায়। রিয়া কিছুক্ষন দাড়িয়ে রনকে দেখতে থাকে। মনে হয় রন খোলা চোখে স্বপ্ন দেখছে সে। যখন ঘোর ভেঙ্গে ঘুরে রিয়াকে দেখে, বলে, রাতে এসো জানেমান। এখন না।

কেমন আছ রন।

রি..য়া। ডার্লিং।! রিয়াকে সত্যি সত্যি সেখানে দেখে রন হকচকিয়ে যায়।

রন তুমি এখনো তেমনই আছো।

তুমিও তো তেমনই আছো। এক ইঞ্চি মালও তোমার শরীর থেকে কমেনি। একদম টাইট শরীর তোমার এখনও রিয়া..?? রিয়া, যাইহোক আজ তোমার আমাকে কিভাবে মনে পড়লো? আগেরবার তো অনেক বেইজ্জাত করে বের করে দিয়েছিলে আমাকে। আর আজ আমার সাথে দেখা করতে।.তাও এই জায়গায়।কিছু হয়েছে নাকি?? আর তোমার সুন্দরী সেক্রেটারি কোথায় গেল?

উজবুক.. তোমার মুখ বন্ধ রাখো। অনেক দুর্গন্ধ আসছে।।

তা তো আসবেই। এখন বলো কি কাজ?

ডেভিল ট্রায়াঙ্গেলের নাম শুনেছ?

ত্রিভুজ।. ত্রিভুজ। ওই ত্রিভুজ। চতুর্ভুজ। শুনেছি তো ক্লাস ৭এ। শিক্ষক পড়িয়ে ছিল। ত্রিভুজে এক সমকোন ত্রিভুজ হয়.. এক অতিভুজ- কোন ত্রিভুজ।পরিভাষা শুন্য।??

আমি সমুদ্রের ডেভিল ট্রায়াঙ্গেলের কথা বলছি। আমি সেখানে যেতে চাই। একচুয়াল ওটাই কারণ।

আচ্ছা ওই ট্রেনগেলের কথা বলছ। ওখানে এমন কি আছে?

তুমি শুধু জবাব দাও। তুমি সাথে যাবে নাকি আমি অন্য কাউকে খুজবো?

দেখো এটা হল। নিজের চেয়ার রিয়ার দিকে ঘুরিয়ে রন বলে তুমি আমাকে এতটা অপছন্দ করো।তারপরও আমার কাছে এসেছ তো এর মানে হল তোমার কাজ আমাকে দিয়েই হবে। নাহলে তুমি স্বপ্নেও আমার কাছে আসতে না। তারজন্য প্রথমে বলো ডেভিল ট্রায়াঙ্গেলে কি আছে?

তা তুমি সময় হলেই জানতে পারবে। এখন বলো সাথে যাবে কিনা। কিন্তু বলার আগে ভেবে দেখ।পুরো জাহাজ দামি মদে ভরা থাকবে আর সাথে আমিও। রনের দিকে আরো ঝুকে নিজের বুক দুলিয়ে স্তনের এক ঝলক রনকে দেখায় আর রিয়া হাসে।

আমার মদের লোভ নেই আর তোমার প্রতি তো একটুও নেই। কিন্তু তুমি যেহেতু এখানে এসেছো তো তোমার মন রাখার জন্য আমি তোমার সাথে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

তো আর কি।। যখন রন রাজি হয়ে গেল তো রিয়া দাড়িয়ে যেতে থাকলে রন আনমনেই বলে যখন কখনো আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম দিকে যাও তো এটা মনে রেখ যে সমুদ্রের চোখ তোমাকে দেখছে।

কি বললে বুঝিনি।

কোন না?

তুমি একটু আগে বললে যে কি সমুদ্রের চোখ দেখে এগেরা-ভেগেরাহ।।

আর আমার সব কথা যদি সবাই বুঝা শুরু করে তাহলে সবাই তো সমুদ্রের শিকারি হয়ে যাবে তাই না??

 

তাড়াতাড়ি জাহাজে উঠো, কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা সবাই এখান থেকে চলে যাব, নিচে দাড়ানো ক্যাপ্টেন নায়ার সবাইকে জাহাজে যাওয়ার জন্য বলছে। রন আর রিয়া আগে থেকেই জাহাজে ছিল তারা ক্যাপ্টেন নায়ারকে দেখছিল।

রিয়া-দেখেছ, রন একজন নেভিকে নেয়ার উপকারিতা, এইবার আমরা অবশ্যই সফল হব।

রন-এটাতো তুমি প্রতিবারই বল।

রিয়া-কিন্তু এইবার নিশ্চিত করেই বলছি।

আমি আছি বলেই তাই না

না আমি আছি বলে

রিয়া, তুমি এখনো বলনাই যে আসলে কি আছে ওই শয়তান ট্র্যাঙ্গলে।

সময় হলেই জানতে পারবে, কিন্তু তুমি কি ওখানে আগে কখনও গেছ?

হুম, প্রায় ২০০ বছর আগে আমি ওখানেই থাকতাম।

কি? ২০০ বছর আগে? মজা কর না।

বাদ দাও, আগে বল তুমি আমাকে ক্যাপ্টেন কেন বানালে না?

এটাও তুমি সময় হলে জানতে পারবে।

রিয়া আর রন কথা বলছে এমন সময় ক্যাপ্টেন নায়ার ওখানে আসল।

নায়ার-ম্যাম, এখন জাহাজকে ছাড়ার আদেশ দেন, সব কিছু রেডি।

নায়ার তুমি ম্যাপ নিয়েছ? আর কিছু  সাদাকে দেখছি তোমার সাথে দেখলাম, কেন নিয়েছ তাদের?

ম্যাম, এদের শুধু মদ দেন ব্যস কাজের জন্য আর কোন চিন্তা নাই। আর ম্যাপ জাহাজের মেইন চেম্বারে ফিট করে রেখেছি যাতে সব জায়গার লোকেশন আছে আপনি চিন্তা করবেন না।

রন-তোমার ম্যাপ আটলান্টিক পার করার পর আর কাজে আসবে না।  ঠিক এটাই হবে। রিয়া ডার্লিং আমাকে ক্যাপ্টেন বানিয়ে দাও।

নায়ার-ম্যাম, এই নমুনা টা কে?

রন নিজের জামা থেকে মদের বোতল বের করে মুখে দিতে দিতে বলল নমুনা, কিন্তু আমার নাম তো দ্য রন, বিখ্যাত শিকারী।

বিখ্যাত শিকারী, এর মানে তোমার নাম কি আগে শুনেছি?

নাম না শুনে থাক তো ডুবে মরো।

আবে এই জাহাজে যেতে চাওতো আমার কথা মত চলতে হবে নাহলে জাহাজ থেকে নামিয়ে দেব।

আচ্ছা তো এই কথা, কিন্তু একটা কথা তুইও মনে রাখ সেই জায়গা থেকে জীবন্ত ফিরে আসতে হলে আমাকে জাহাজে রাখতে হবে বলে রন সেখান থেকে চলে গেল। ক্যাপ্টেন নায়ার আর রিয়া দুইজনেই ওর যাওয়া দেখল।

রিয়া-রিল্যাক্স ক্যাপ্টেন, রন কি বলে না বলে কেউ ওর কথা বুঝে না। চলো পরে কি করব তার প্ল্যানিং করি।

ক্যাপ্টেন নায়ার-ম্যাম, আপনাকে আমার সহকারীর সাথে পরিচয় করাই। শেঠ এদিকে এসো।

জাহাজের আর একদিক থেকে শেঠ দৌড়ে রিয়া আর ক্যাপ্টেন নায়ারের কাছে আসে।

শেঠ-ক্যাপ্টেন আপনি আমাকে ডেকেছেন।

নায়ার-হা, ওনার সাথে পরিচিত হও, ওনি হলেন মিস রিয়া। আর ম্যাম এ হচ্ছে আমার খাস সহকারী আর বন্ধু শেঠ।

রিয়া-এখন চল পরবর্তি কাজের প্ল্যানিং করি।

তিনজনে জাহাজের ভিতরে এক চেম্বারে গেল যেখানে সমুদ্রর রাস্তার একটা ম্যাপ লাগানো ছিল।

ক্যাপ্টেন নায়ার-ম্যাম, এই জায়গা হচ্ছে আটলান্টিক মহাসাগরের, এ পর্যন্ত পৌছাতে কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু এরপর পশ্চিম দিকের সমুদ্রের ব্যাপারে অনুমান করা একটু মুশকিল। ওখানে পৌছার পরে হয়ত আমি কিছু বলতে পারব।

রিয়া-এটা ঠিক আছে। এখন আমি একটু আরাম করে নেই। রাতের জন্য কি ব্যবস্থা করেছ?

ক্যাপ্টেন নায়ার, রিয়ার প্রশ্নের উত্তরে শেঠের দিকে তাকাল।

শেঠ-ম্যাম, আমি সকল লাইট চেক করেছি, সব ঠিক আছে। আর যেরকম ক্যাপ্টেন বলল আটলান্টিক মহাসাগরের আগে আমাদের কোন বিপদ নেই। শুধু একটি আইল্যান্ড পরবে। কিন্তু সেটা অনেক পরের ব্যাপার, রাত জাহাজ সমুদ্রের উচ্ছল ভরা জলের মোকাবেলা করতে হবে যেটা বড় কোন বিষয় না। দ্যাট্স অল।

রিয়া-ভাল হয়েছে শেঠ। এখন আমি ঘুমাতে যাচ্ছি, গুড নাইট।

রিয়া চেম্বার রুম থেক  বের হয়ে গেল। ক্যাপ্টেন নায়ার বলল গুড নাইট।

 

রন জাহাজের পার্টি মহলে বসে এখনও মদ গিলছিল। হাতে একটা বোতল নিয়ে বাহিরে বের হয়ে আসল।

বুঝিনা আজকালকার পোলাপান নিজেকে কি ভাবে। ব্যাপার না, রন তুই যে সুযোগের অপেক্ষায় ছিলি তা এবার এসে গেছে। চল এবার ফটাফট নক্সা খুলে দেখে ফেল।

রন জাহাজের খোলা আর খালি জায়গায় সরে আসল তারপর পকেট থেকে একটা কাপড়ের নকশা বের করল। রন মদের বোতল এক পাশে রেখে বসে বসে নকশা দেখতে লাগল।

এখান থেকে ডানে। ভাল ভাবেই জাহাজকে ডানে ঘুরিয়েছে। কিন্তু এদের এটা জানা নেই যে আটলান্টিকের আগে দুইটি আইল্যান্ড পরবে। এরা শুধু একটার কথা জানে। হুম, ওই দ্বিতীয় আইল্যান্ড মাঝে মাঝে সমুদ্রে দেখা যায়। আর ওই সময় এর বাহিরে থাকতে হবে, আমার কাজ হয়ে যাবে।

ক্যাপ্টেন নায়ার রাতে ঘুমাতে যাবার আগে এক বার জাহাজের সব জায়গা চেক করতে বের হয়। জাহাজে রাউন্ড লাগাতে লাগাতে সে রনের কাছে গিয়ে পৌছে।

ক্যাপ্টেন নায়ার-তুই এখানে কি করছিছ, আর তোর হাতে এটা কি?

রন হকচকিয়ে গিয়ে হাতের নকশাটা আবার পকেটে রেখে দেয়।

আমার হাতে মদের বোতল যা আমি দিবনা।

আমি বোতলের কথা বলছিনা, তোর পকেটে কি?

আমার পকেটে হবে কোন সমুদ্রের মাছ, যেটা মরে গেছে মনে হয়, আমার খুব পছন্দ এটা।

ক্যাপ্টেন নায়ার  পাশেই পড়ে থাকা একটি রড হাতে নিয়ে রনের দিকে তাক করে বলল

বেশি হুশিয়ারি করিছ না নইলে পুরোটা তোর পেটে ঢুকিয়ে দেব।

ভাগ এখান থেকে নইলে মার খাবি, ভর্তা বানিয়ে দিব।

আবে তোর মত কতজনকে ঠিক করেছি, আজকে তুই বাচবিনা।

তাই নাকি, তবে আয় ক্যাপ্টেন নায়ার।

রন কোমর থেকে তলয়ার বের করে। দুজন দুজনের দিকে এগিয়ে যায়। ক্যাপ্টেন নায়ার রড উঠিয়ে রনের দিকে জোড়ে বাড়ি মারে। রন পুরো শরীর ঘুরিয়ে সেই বাড়িকে পাশ কাটায়।

রন-চেস্টাটা ভাল ছিল, আবার আয়।

রন এটা বলেই ওখান থেকে দৌড়ে পালাতে থাকে। ক্যাপ্টেন ওর পিছে পিছে দৌড়ে আসতে আসতে বলে, দাড়া শালা জংগলি পালাচ্ছিস কেন, এতক্ষন তো বড় বড় কথা বলছিলি, কিন্তু রন জাহাজের দিকে জোড়ে দৌড়াতে থাকে। কিছুদুর যেয়ে রন স্পিড কমায়  আর জাহাজের কিনারে রেলিংয়ের রডে পা দিয়ে উঠে দাড়ায়। ক্যাপ্টেনের গতি বেশি ছিল,ও সামলাতে পারে না, রন ওর পকেট থেকে একটা কাপর বের করে ক্যাপ্টেনের চেহারার উপর রেখে চেহারা পুরো ঢেকে দেয়।

এবার বল, আমার নাম কি ক্যাপ্টেন নায়ার। এবার বুঝেছিছ আমি কে?

ক্যাপ্টেন নায়ার হাত দিয়ে কাপড়টা সড়াতে চেস্টা করতে থাকে, সে কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না, দস্তাদস্তি করতে করতে সে জাহাজের কিনারে চলে আসে আর দেখতে দেখতেই সমুদ্রের মধ্যে পড়ে যায়। রন ওখানে দাড়িয়ে তা দেখতে থাকে।

ভাগ বেটা রন, কেউ যদি দেখে ফেলে তবে খবর আছে। চল চুপ চাপ দুই তিন বোতল মেরে শুয়ে পর।।

 

এ বেচে আছে? সমুদ্রের কাছে এক বনে কাছের এক দ্বীপের কিছু দ্বীপবাসী সমুদ্রের অন্ধকারে ভেসে আসা এক লোককে পড়ে থাকতে দেখে একে ওপরকে জিজ্গাসা করল।

মনে হয় মরে গেছে। ওর জামা কাপড় দেখে মনে হয় কোন জাহাজের ক্যাপ্টেন। দ্বীপবাসীদের একজন বলল। যাকে ওরা মরা ভেবেছিল সে হঠাৎ নড়ে উঠল।

আরে এতো বেচে আছে। ওখানে থাকা সবাই নিজেদের মধ্যে ফিস ফিস করতে থাকে।

হাই। আমি ক্যাপ্টেন আদিত্য। আদিত্য হাত ওদের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল। কিন্তু ওরা ভয়ে দুরে সরে গেল।

মনে হয় এরা জংলি লোক, ইংলিশ জানে না। কোন ব্যাপার না বাংলাতে বলে দেখি। আদিত্য মনে মনে ভাবল। আর এক বার হাত ওই জংলিদের দিকে বাঁড়াল। এইবার ওরা আরও দুরে সড়ে গেল।

আদিত্য-আরে তোমরা সব ভয় কেন পাচ্ছ। আমি তোমাদের মতই মানুষ।

আদিত্যের কথা ওরা বুঝতে পারলো না আর নিজেদের মধ্যে হুয়া-হুয়া করতে করতে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকে।

আদিত্য-শালারা বাংলাও বুঝে না। উত্তরে আদিত্য কেবল হুয়া-হুয়া শুনতে পেল।

কই এসে ফাঁসলাম, একবার ওই পাছা থেকে আগুন বের করা জানোয়ারে মারলো তো এখন এই হুয়া-হুয়া। আদিত্য ওখানেই মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে আর জংলিদের দেখতে থাকে। সবার কান আর নাকে ছিদ্র। জংলিরাও আদিত্যর দিকে চেয়ে আছে। আদিত্য ওই জংলিদেরকে নিজের দিকে দেখিয়ে মাথা নিচু করে। এই জংলিরা আবার আমাকে কাচা খাওয়ার কথা চিন্তা করছে নাতো আদিত্যর চিন্তায় বেগাত ঘটিয়ে কে যেন বলে উঠে,

হিন্দুস্তানি নাকি। আদিত্য নিজের কান কে বিশ্বাস হচ্ছিল না যে কেউ বাংলায় কথা বলছে। আদিত্য উপরে তাকিয়ে দেখে প্রায় ওর বয়সি এক নওজওয়ান ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

আদিত্য-কি তুমি বাংলায় কথা বলছ।

হা, আমি বাংলা বুঝি। ।

ভাল দোস্ত। এখন এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা বল।

কিছু সময় আরাম করো। তারপর এই সব বলা যাবে।

আরে বল না ইয়ার, আমার ঝলদি এখান থেকে বের হতে হবে।

ঠিক আছে, আমি অপেক্ষা করছি ।

কিছুক্ষন পরে ওরা দুজনে দ্বীপে কিনারে এসে দাড়াল ।

আদিত্য-এখন এই খোলা সমুদ্র পেরোতে হবে, এর কোন বন্দবস্ত করেছ কি।

পিছে দেখো আমাদের লোকেরা একটা নৌকা নিয়ে আসছে। এই কথা বলে নওজওয়ান নিজের সাথিদের পাশে চলে যায়। আর এক বৈঠার দিকে আদিত্যকে ইশারা করে। আদিত্য ওই বৈঠাকে উঠায়, দুজনে ওই নৌকায় উঠে বসে। বৈঠা মারতে মারতে সামনের দিকে যেতে থাকে।

আদিত্য-একটা কথা বলত, আমরা আসলে কোথায়।

আমার আসলে প্রয়োজনই হয়নি এটা জানার।

মতলব তুমি আমাকে এই সমুদ্রে গোল দুনিয়ায় ঘোরাচ্ছ। ঠিক আছে এতো বলো তোমার নাম কি।

রাজ।

কি, আমি ভাবছি তোর নাম কোন জংলিদের মত হবে। কিন্তু এখন দেখি তা না। আমি কি এর কারন জানতে পারি।

আমি যখন ছোট তখন আমার মা আর আমাকে কিছু আজব লোকে আমাদের বাসা থেকে জোর করে উঠিয়ে নেয়। তারপর যখন আমার চোখ খুলে তখন আমাদের এক সমুদ্রের কিনারায় পড়ে থাকতে পাই। কিন্তু ওই সময় সমুদ্রের ঢেউ আমাদের আবার সমুদ্রে টেনে নেয় আর আমি ভাসতে ভাসতে এখানে এসে পৌছি। এই লোকেরা তখন আমাকে বাচায় আর লালন পালন করে।

এখন বুঝছি তুই বাংলা কিভাবে জানস, মানে তুই এই জংলিদের মত না।

এখন কি সমুদ্রের ডুব দিলে আমার কথা বুঝবে।।।।।।।

 

 

রন, তুমি ক্যাপ্টেন নায়ারকে কোথাও দেখেছ। রিয়া, ক্যাপ্টেন নায়ারকে না পেয়ে রনকে জিজ্ঞাসা করে।

আমি কিভাবে জানব, হবে কোথাও

রন, আমি পুরা জাহাজ খুজেছি ক্যাপ্টেনকে কোথাও পেলাম না,

এতো খুব খারাপ কথা। কিন্তু ক্যাপ্টেন নায়ার গেল কই। তুমি ওকে খোজ আমার কিছু কাজ করত হবে।

রন, ওখান থেকে দরজায় আসে আর পকেট থেকে নকশা বের করে দেখতে থাকে। হুম। তো রেজিস্তানে এসে নকশা শেষ। কিন্তু ওখানে কিভাবে পৌছাব। ওই নকশা ছাড়া আমি সমুদ্রের রাস্তা তো খুজে পাব না। রনকে ওই সময় সেঠ এসে টোকা দেয়,

রন, তুমি ক্যাপ্টেন স্যারকে কোথাও দেখেছ।

তুই আবার কে। আর এই সবাই ক্যাপ্টেনকে কেন খুজছে।

বিনা ক্যাপ্টেন এই জাহাজ কে চালাবে।

ও এই কথা! তো আমাকে ক্যাপ্টেন বানিয়ে দাও। বিশ্বাস কর জীবিত ফিরিয়ে নিয়ে আসব।

তুই আর ক্যাপ্টেন। হে.. চেহারা দেখেছিছ তোর, ক্যাপ্টেন হবে!

আবে চেহারায় তুই ও তো ক্যাপ্টেনের মত দেখতে না। এখন ফুট এখান থেকে আমার মেজাজ খারাপ করিছনা।

এখন আমার কাজ আছে তাই যাচ্ছি, কিন্তু পরের বার তোকে ঠিকই জবাব দিব।

আমি তোর জবাবের প্রতিক্ষায় থাকলাম।

সবাই সব জায়গায় তন্ন তন্ন করে খুজল কিন্তু ক্যাপ্টেন নায়ারকে কোথায়ও পেল না। রিয়া পেরেশান হয়ে পড়ে। কারন ক্যাপ্টেনকে ছাড়া জাহাজকে বেশি সময় রাখা যায় না।

কি চিন্তা করছো জানেমান।

রন, তুমি আমার রুমে কি করছো।

কিছু না, এই বাহিরে মন বসছিল না। ভাবলাম আমার জানেমানের সাথে দেখা করে আসি।

রন, ক্যাপ্টেন নায়ারকে কোথায়ও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তোমরা কেন ওর কথা এত চিন্তা করছ। ভয়ে মনে হয় পালিয়েছে। এখনও সময় আছে আমাকে  ক্যাপ্টেন বানিয়ে দাও।

রন, তুমি কিছু করনি তো!

আমি ভোলা ভালা ভাল মানুষ আমি কি করতে পারি। রন রিয়াকে চোখ মেরে বলে।

তুমি আমার সাথে চান্স মেরো না।

ডার্লিং তোমার মত গোলাপের কলি আজ পর্যন্ত কোথাও দেখিনি। কিন্তু আমার একটা কথা বলার ছিল।

কি।

এই তোমার জাহাজ ঠিক মত চলছে তো।

এতে কোন সন্দেহ নেই। সব ঠিক মত চলছে।

রন ওখান থেকে চলে যেতে যেতে ঘুরে রিয়াকে বলে,

তুমি আকাশে চক্কর দেয়া আগুন ছোড়া বড় জানওয়ার সম্পর্কে কোন কিছু ভাবছ?

কখনই না, ফালতু কথায় আমি কখনো কান দেই না।

আলবিদা জানেমান। আমার বোতল প্রতিক্ষা করছে। পরে দেখা হবে।

 

 

জাহাজে রন এক হাতে বোতল নিয়ে ঘুরা ঘুরি করছে। এক কোনে কিছু লোককে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ওদের দিকে চলতে থাকে।

আবে তোমাদের কোন কাজ কাম নাই নাকি, যাও জাহাজকে ডানে ঘোরাও।

রিয়াও ওখানে দাড়ানো ছিল। ও ওখানে দাড়ানো এক লোককে ইশারা করে মেইন চেম্বার রুমে পাঠায়।

রন-এই সাদা কাপড় এখনও কেন দাড়িয়ে আছ। শুনো নাই জাহাজের ক্যাপ্টেন কি বলছে?

রিয়া-রন, তোমাকে ক্যাপ্টেন কে বানিয়েছে?

রন-তুমি জানেমান?

রিয়া-কিন্তু আমার যতটুকু মনে পরে আমি একটু আগে শেঠজিকে জাহাজের নতুন ক্যাপ্টেন বানিয়েছি। আর যতটুকু মনে পরে তোমার নাম শেঠ না রন, দুঃখিত দ্য রন। মহান সমুদ্র শিকারী।

তুমি আমার বেজ্জতি করছ না, ইজ্জত করছ।

যখন তোমার হাত এই বোতল থেকে আলাদা করবে তখন বুঝতে চেস্টা কর তাহলেই বুঝতে পারবে।

আমি যাচ্ছি জানেমান। এক মেয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে।

রনের যাওয়ার পরে ওখানে সেই লোকটা আসল যাকে রিয়া মেইন চেম্বার রুমে পাঠিয়ে ছিল। ক্যাপ্টেন শেঠ, ও ঠিকই বলেছে, ম্যাপ অনুযায়ি জাহাজকে ডান দিকে ঘোরাতে হবে। ওটাই আমাদের দিক।

Leave a Reply