স্ক্যান চটি

ঝর ঝর বৃষ্টি ঝড়ছে

বয়স ওর চল্লিশের কোঠায় তবু এখনো বিয়ে করেনি। এক সময় দিন রাত পরিশ্রম করতে হয়েছে গাধার মতো খাটতে হয়েছে মনে শুধু একটাই দুর্বার ইচ্ছা। উপরে উঠতে হবে। অনেক উপরে। কর্মজীবনের শুরুতে কিন্তু এই ইচ্ছাটা সাঈদের মনে ছিলো না। বি এ পরীক্ষার ফল বেরুনোর দুদিন পরেই হঠাৎ ষ্টোকে তার বাবা মারা গেলেন। মা গিয়েছিলেন আরো আগে। একটিমাত্র বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিলো। সাঈদের বাবা সামান্য চাকরী করতেন। কোনো সঞ্চয় ছিলনা। বাধ্য হয়েই সাঈদ আর এম এ পড়তে পারলো না। বাবার অফিসের একটা কেরানীর চাকরী পেলো।

একা মানুষ। মেসে থাকতো। চারশত দশ টাকা বেতনে মোটামুটি মাস চলে যেতো। কিন্তু হঠাৎ সাইদের মধ্যে পরিবর্তন এলো। অফিস শেষে একদিন বিকেলে মেসে ফিরছিলো। দুপুর থেকেই ঝির ঝির করে বৃষ্টি ঝরছে। মেস ও অফিসের দূরত্ব এক মাইলের ও কম। হেটেই যাতায়াত করে সাঈদ। এ ছাড়া উপায় নেই। তার যাতায়াতের পথে বাস চলে না। রিক্সায় চড়ার কথা কল্পনাও করতে পারে না। বর্ষকালে তাই প্রায়ই ভিজতে হয়। সেদিনও ভিজতে ভিজতে পথ হাটছিলো। আমিন কোর্টের কাছে হঠাৎ একটা মোটরগাড়ী তার পাশে ব্রেক করে থামলো। সাঈদ তাকিয়ে দেখলো তার স্কুলের সহপাঠি তারেক ড্রাইভিং সিটে বসে তার দিকে তাকিয়ে হাসছে।

তারেক বার তিনেক এস এস সি পরীক্ষায় ফেল করে কোথায় যেনো গায়েব হয়ে গিয়েছিলো। যখন বি, এ পরীক্ষা তখনো তারেকের সঙ্গে সাঈদের দেখা হয়েছিলো। অত্যন্ত দুঃস্থ চেহারা। সাঈদ তাকে চা সিঙ্গারা খাইয়েছিলো। বলেছিলো লেখাপড়া যখন হলো না তখন একটা চাকরী টাকরী কর। তারেক বলেছিলো কোথায় চাকরী পাবো? ওর কথার উত্তর অবশ্য দিতে পারেনি। আজ সেই তারেককে ঝক ঝকে গাড়ীতে দামী পোশাক দেখে বেশ অবাক হয়ে গেলো সাঈদ।

তারেক বললো হাবার মতো, কি দেখছিস? গাড়ীতে উঠে এসো। কোনো কথা না বলে সাঈদ গাড়ীতে উঠে তারেকের পাশে বসলো। তারেক জিজ্ঞেস করলো কোথায় যাচ্ছিলে ভিজতে ভিজতে?

মেসে। এতোক্ষণে নিজেকে খানিকটা সামলে নিয়েছে সাঈদ। তারেক বাম হাতে বুক পকেটে থেকে বিদেশী সিগারেটের প্যাকেট ও লাইটার বের করে সাঈদের হাতে দিয়ে বললো দুটো জ্বালাও। একটা আমার ঠোটে গুজে দিও।

চাকরীতে ঢুকে প্রথম মাসের বেতন পেয়ে সাঈদ একটা বিদেশী সিগারেট কিনেছিলো শখ করে। এমনিতে সে বিড়ি খায়। সে ধণী নয়। রোজ পঞ্চাশ পয়সার বেশী সে বিড়ির বাবদ খরচ করে না। বদভ্যাস তবু ছাড়তে পারে না। মেসে খাওয়া বাবদ খরচ হয় সাড়ে তিনশত টাকা। পনেরো টাকা বিড়ি। অবশিষ্ট থাকে পয়তাল্লিশ টাকা সকালে নাশতা খায় না। একবার ভাত খেয়ে নেয় দুপুর কখনো খুব খারাপ লাগলে এক কাপ চা খায়। এখন তাও বন্ধ করেছে। সবচেয়ে খারাপ স্টলেও চায়ের কাপ এখন এক টাকা। জামা কাপড়ের অবস্থা করুণ। বছর খানেক আগে ফুটপাথ থেকে একটা প্যান্ট ও একটা শার্ট কিনেছিলো। সপ্তাহের ছয়দিন পরে। ছুটির দিন নিজ হাতে ধুয়ে দেয়।

তারেক বললো এখন আর মেসে ফিরে কি করবে? আমার বাসায় চলো। আড্ডা দেয়া যাবে।

সাঈদ কুণ্ঠিত স্বরে বললো এই মলিন পোশাক নিয়ে তোমার বাসায় যাবো? তোমার স্ত্রী কি মনে করবে?

হো হো করে হেসে উঠলো আরেক। বললো ওসব ঝামেলা করিনি এখনো। সবেতো ব্যবসার আসল লাইনটা খুজে পেয়েছি। আরো কিছু দিন পরে বিয়ের কথা চিন্তা করবো। তাছাড়া বয়স তো এখনো ত্রিশ হয়নি। অতো তাড়া কিসের?

সাঈদ আর কিছু বলে না। নীরবে সিগারেট টানতে থাকে। শান্তিনগরে একটা দোতালা বাড়ীর গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলো ওরা। তারেক বলো আমি দোতায় থাকি। নিচের তলাটা আড়াই হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছি।

এটা তাহলে তারেকের নিজস্ব বাড়ী? সাঈদের মনে পড়লো আগে তারেকরা থাকতো মুগদাপাড়া দরমার বেড়া দেয়া দুটো ছোট ঘরে। বর্ষাকালে ঘরে পানি উঠতো। সিড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে এলো ওরা। দামী আসবাবপত্র সাজানো ড্রইং রুম। একজন চাকর ছুটে এলো। তবে তাকে জিজ্ঞেস করলো কোনো ফোন এসেছিলো নাকি আবদুল?

আবদুল বললো জ্বি হ্যা। কিবরিয়া সাহেব ফোন করেছিলো। বলেছেন রাত আটটায় তিনি আসবেন খুব জরুরি দরকার।

ঠিক আছে যা কফি আর কিছু নাশতা নিয়ে আয়।

ড্রইং রুমের একপাশে একটা পিয়ানো দেখে সাঈদ জিজ্ঞেস করলো ওটা বাজায় কে? তুমি?

দুর আমি কি ওসব পারি নাকি? ড্রইংরুম সাজানোর জন্যেই ওটা রেখেছি।

সাঈদ বললো আর সব কোথায়?

বাবা মাকে দেশের বাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছি। কিছু ফসলের জমি কিনেছি। ওগুলো বাবা দেখাশুনা করেন। আর বাবাকে দেখাশুনা করার জন্য মাও সঙ্গে গেছেন।

আর তোর ছোট ভাই বারেক?

বারেক আছে আমেরিকায় ওকে ইলেকট্রোনিক ইঞ্জিনীয়ারিং পড়তে পাঠিয়েছি। আমার তো লেখাপড় হলো না। বারেক আই এস সি ভালো ভাবেই পাশ করেছিলো। তাই পাঠিয়ে দিলাম। আর বোন দুটোরতো কবেই বিয়ে হয়ে গেছে।

কৌতহল চাপতে পারলো না সাঈদ। জিজ্ঞেস করলো এতো সব করসো কোন যাদুমন্ত্র বলে।

হাসলো তারেক। বললো যাদু মন্ত নয় স্রেফ একটা সার্টিফিকেট।

মানে?

দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক কর্মীর, সাটিফিকেট। অবশ্য দুশো টাকা খরচ হয়েছিলো। ওটা সংগ্রহ করে প্রথম পেলাম সুতার পারমিট। তার মাস খানেক পরেই সিগারেট। তারপরে আসতেই লাগলো।

সাঈদ বললো শুনেছি স্বাধীনতার পরে অনেকে রাতারাতি ধনী হয়েছে। আজ তোকে দেখে বুঝতে পারলাম।

তারেক বললো আসলে উপরে উঠার জন্য প্রবল ইচ্ছা চাই। সেই সঙ্গে পরিশ্রম ও বুদ্ধি। তাহলে আর তোমাকে ঠেকায় কে?

সেদিন তারেকের বাসা থেকে ফিরে আসার পরেই সাঈদের মধ্যে পরিবর্তন এলো। নিজের অবস্থা পাল্টানোর জন্যে অস্থির হয়ে উঠলো সে। মানুষের চেষ্টার অসাধ্য হয়তো সত্যিই কিছু নেই। কমার্শিয়াল ফার্মের চাকরী ছেড়ে সে একটা জুট বেলিং ফ্যাক্টরীতে এপ্রান্টিস সুপারভাজারের চাকরী নিলো। বেতন যাই হোক ওভারটাইম বারোশত টাকর মতো মাসে আয় হতো। পরিশ্রম অধ্যবসায় ও নিষ্টার ফলে সে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক উপরে উঠে গেলো। পাচ বছরে তিনটে কোম্পানী বদল করে বর্তমানে রাবার ফ্যাক্টরীতে ম্যানেজার হয়েছে কিন্তু এখনো তার উপরে উঠার নেশা কমেনি। এখন তার চোখ জেনারেল ম্যানেজারের পদের দিকে। তারপরে একজন ডিরেক্টার ম্যানেজিং ডিরেক্টার।

তারেকের সঙ্গে এখনো তার মাঝে মাঝে ক্লাবে দেখা হয় তারেক অবশ্য ঢাকায় থাকে কম। বেশীর ভাগ সময়ই তাকে ব্যবসার কাজে ব্যাংকক হংকং সিঙ্গাপুর ইত্যাদি জায়গায় যেতে হয় কয়েকবার নিউইয়র্কে গিয়েছে।

সাইদ যেদিন ক্লাবে যায় না সেদিন বাসায় বসেই বিকেল বেলা সামান্য ড্রিংক করে। মাঝে মাঝে তার মনে পড়ে যায় একদিন সে বিড়ি খেতো। আর আজ দামী মদ ও দামী সিগারেট পিছনেই সে বহু টাকা খরচ করে।

সেদিনও ব্যালকনিতে বসে সাঈদ মদের গ্লাসে আস্তে আস্তে সিপ করছিলো। শেষ বিকেল। সূর্য ঢাকা পড়ে গেছে সুউচ্চ অট্টালিকাগুলো পিছনে। ব্যালকনির ঠিক মুখোমুখি আর একটি বাড়ীর দুটো জানালা। ঘরটাতে একটি কিশোরী থাকে। প্রতিবেশী হিসাবে ওদের সঙ্গে সাঈদের আলাপ আছে। কিশোরীর নাম বিদিতা বয়স পনের বছরের মতো। সাঈদ বিদিতার দিকে কোন বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়নি। অতোটুকু মেয়ের দিকে কিইবা দৃষ্টি দেবে সে? বিদিতা কিন্তু সুযোগ পেলেই জানালায় দাড়িয়ে সাঈদের সঙ্গে কথা বলতো।

সেদিনও বিদিতা জানালায় এসে দাড়ালো ডাকলো এই যে ভদ্রলোক শুনছেন?

সাঈদ বললো হ্যা শুনছি।

বিদিতা বললো আচ্ছা আপনি বিকেলে বাসায় থাকলেই ড্রিংক করেন কেন?

সাঈদ বললো অভ্যেস হয়েছে তো তাই।

খুব বাজে অভ্যাস বাবাও ড্রিংক করে। আমার একটুও ভালো লাগে না। এরপরে কি বলবে সাঈদ ভেবে পেলো না। অগথ্যা গ্লাসে সোনালী হুইস্কিতেই সে চুমুক দিল।

বিদিতা আবার বললো আমার সঙ্গে বেড়াতে যাবেন?

প্রস্তাবটা অপ্রত্যাশিত। অবাক হলো সাঈদ বললো হঠাৎ আমার সঙ্গে বেড়ানোর সখ হলো কেন?

এমনি।

বড়ো জানালা বিদিতার মাথা থেকে হাটু পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিলো। জিন্সের টাইট প্যান্ট ও হলুদ পাঞ্জাবী পরেছে বিদিতা। বুক দুটো বেশ স্পষ্ট। সাঈদের মনে হলো বয়সের তুলনায় বিদিতার শরীরটা অনেক বড়োসড়ো। কি ভেবে সাঈদ রাজী হয়ে গেলো। বললো বেশতো যাবো বেড়াতে। কবে যাবে? এখনই তুমি আমার বাসায় চলে এসো।

দুমিনিটও বোধ হয় কাটেনি বিদিতা উপস্থিত হলো। ওর দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেলো সাঈদ এরই মধ্যে পোশাক পালটে ফেলেছে সে হটপ্যান্ট ও টাইট গেঞ্জী পরেছে। কুচকির সামান্য নীচে সাদা জংঘের সঙ্গে সেটে আছে প্যান্ট। সুগোল নিতম্ব ও সামনের ত্রিভুজটি এতো বেশী পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে তাকাতে ইতস্তত করছিলো সাঈদ।

বিদিতা বললো কি হলো?

না মানে এই পোশাক পরে তুমি বাইরে যাবে?

কেন? কি হয়েছে আপনার লজ্জা করছে। নাকি? দুর আপনি কোন কাজের নন। আসুন আপনার লজ্জা ভাঙ্গিয়ে দেই।

এরপরই বিদিতা যে কান্ড করলো তাতে সাঈদ একেবারে থ হয়ে গেলো। বিদিতা ছুটে এসে সাঈদের গলা জড়িয়ে ধরে ঠোটে কয়েক সেকেন্ড ধরে চুমু খেলো। তারপরে মুখ সরিয়ে সাঈদকে সজোরে নিজের নরোম বুকের মধ্যে চেপে ধরলো। বাধা দিতে পারলো না সাঈদ ইতিপূর্বে সে কখনো নারী দেহের স্পর্শ পায়নি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই উত্তেজনায় অধীর হয়ে উঠলো। কি করছে সে সম্পর্কে তার কোন ধারনাই রইলো না। বিদিতাকে টেনে নিয়ে গেলো সে শোবার ঘরে। নরম বুকে পাগলের মতো আদর করতে লাগলো।

এক এক করে খুলে ফেললো বিদিতার ও নিজের সব পোশাক। পাজা কোলো করে তুলে বিদিতাকে চিৎ করে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বললো আমি তোমাকে চাই।

বিদিতা দুচোখ বন্ধ করে ফেলে বললো এখন আর বুঝি লজ্জা নেই?

কথাটা সাঈদের কানে ঢুকছে কিনা বোঝা গেলো না। সে বিদিতার নগ্ন শরীরটা নিজের শরীরে দিয়ে ঢেকে দিলো। তারপরে ওরা দুজনে মেতে উঠলো সেই পরম আনন্দের খেলায়।

 

Leave a Reply